নিজস্ব প্রতিবেদক
রোহিঙ্গা নাগরিক হওয়ার সত্ত্বেও তাদেরকে দেওয়া হয়েছে জাতীয় নাগরিক সনদ ও জন্ম নিবন্ধন সনদ। এ সনদগুলো দিতে নেওয়া হয়েছে মোটা অংকের অর্থ। পরে সনদ নিয়ে পাসপোর্ট বানাতে গেলে রোহিঙ্গা হিসেবে চিহ্নিত হয় তারা।
অভিযোগের ভিত্তিতে দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে হাটহাজারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সহ মোট ১১ জনের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৫ জুন) দুপুরে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বাদি হয়ে একটি মামলাও দায়ের করেন।
অভিযুক্তরা হলেন, চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানা নির্বাচন অফিসার কার্যালয়ের অফিস সহায়ক মো. জয়নাল আবেদীন (৩৪), চট্টগ্রাম জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিস কার্যালয়ের অফিস সহায়ক মো. নুর আহম্মদ (৪২), চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলা নির্বাচন অফিস কার্যালয়ের অস্থায়ী ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. সাইফুদ্দিন চৌধুরী, কেরানীগঞ্জ থানা নির্বাচন অফিস কার্যালয়ের অস্থায়ী টেকনিক্যাল এক্সপার্ট সত্য সুন্দর দে, হাটহাজারী উপজেলা ৩ নম্বর মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আবছার, একই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার নুরুল ইসলাম, হাটহাজারী উপজেলা ৩ নম্বর মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক জন্ম নিবন্ধন প্রস্তুতকারী মো. বেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলা মির্জাপুর ইউনিয়নের নবী হোসেনের পুত্র মো. আব্দুস সালাম, আব্দুস সালামের পুত্র মো. আজিজুর রহমান, মেয়ে লাকি প্রকৃত নাম রমজান বিবি এবং হাটহাজারী মির্জাপুর ইউনিয়নের বড় হুজুরের বাড়ির নজির আহম্মদ।
দুদক সুত্রে জানা যায়, অভিযুক্তরা লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে একে অন্যের সহায়তায় ভুয়া পরিচয়ে নাম ঠিকানা ব্যবহার করে জাতীয় নাগরিক সনদ ও জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করে। এসব সনদ নিয়ে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট বানাতে আবেদনও করা হয়।
এ ঘটনায় দন্ডবিধি ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘অভিযুক্তরা ক্ষমতা অপব্যবহার করে একে অন্যের সহায়তায় মোটা অংকের অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে চারজন রোহিঙ্গাদের সনদ দিয়েছেন। তার মধ্যে চারজন রয়েছেন হাটহাজারী উপজেলার নির্বাচন অফিস কার্যালয়ের কর্মচারী এবং বাকি তিনজনের মধ্যে একজন ইউপি চেয়ারম্যান সহ সেখানকার নাগরিক সনদ ও জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রস্তুতকারী ব্যক্তিরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘অভিযুক্তরা সবাই পলাতক। শিগগিরই সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। তদন্তে এ ঘটনার সঙ্গে অন্য কারো জড়িত থাকার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।’