সেই মুনতাহার লাশ মিললো বাড়ির পুকুরে

Daily Daily

Zakiganj

প্রকাশিত: ১:০২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১০, ২০২৪

ডেস্ক নিউজ : সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় নিখোঁজ হওয়ার আটদিন পর পাঁচ বছরের শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিনের লাশ তার নিজ বাড়ির পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। মুনতাহা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বীরদল ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদ ও ফাতেমা বেগমের একমাত্র কন্যা। গত ৩ নভেম্বর, বুধবার বিকেল তিনটার দিকে খেলতে বেরিয়ে মুনতাহা নিখোঁজ হয়েছিল।

রোববার (১০ নভেম্বর) ভোররাতে প্রায় চারটার দিকে মুনতাহার নিথর দেহ তার নিজ বাড়ির পুকুরে ভেসে উঠতে দেখেন পরিবারের সদস্যরা। স্থানীয়দের সহায়তায় শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আওয়ালের নেতৃত্বে একটি পুলিশ টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে।

**পরিবারের সন্দেহ: পরিকল্পিত অপহরণের অভিযোগ**

মুনতাহার পরিবার শুরু থেকেই দাবি করে আসছিল যে, এটি নিছক নিখোঁজের ঘটনা নয় বরং এটি একটি পরিকল্পিত অপহরণ। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, নিখোঁজের পরপরই কানাইঘাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছিল। এ ছাড়াও অপহরণকারীকে ধরিয়ে দিতে পরিবার এক লাখ টাকার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। পরিবারের সদস্যরা আশঙ্কা করছিলেন যে মুনতাহাকে কেউ অপহরণ করে থাকতে পারে।

মুনতাহার দাদা মো. ছালিক মিয়া সংবাদমাধ্যমে বলেন, “আমরা প্রতিদিনের মতো আশপাশের সব জায়গায় খুঁজেছি। বিভিন্ন মাধ্যমে খবর দিয়েছি। আমরা আশা করেছিলাম, হয়তো সে কোনোভাবে ফিরে আসবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমাদের কন্যাটিকে আমরা এভাবে হারাবো, তা ভাবিনি।”

**ঘটনার দিন: বাবা-মায়ের সঙ্গেই ছিল মুনতাহা**

৩ নভেম্বর সকালে মুনতাহা তার বাবার সাথে স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিলে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফিরে এসে সে বাড়ির আশপাশে অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে খেলা করতে যায়। প্রতিদিনের মতোই বিকেলে বাড়ি ফিরে আসার কথা থাকলেও, সেদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান মেলেনি। তখনই পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন এবং গ্রামের আশপাশে সকলকে খবর দেন। পরবর্তী কয়েকদিন ধরে, আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয়রা মিলে তন্ন তন্ন করে মুনতাহাকে খুঁজতে থাকেন, কিন্তু তার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না।

**পুলিশের তদন্ত ও স্থানীয়দের মধ্যে শোকের পরিবেশ**

ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ জানিয়েছে, তারা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখছেন এবং মুনতাহার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা করছেন। কানাইঘাট থানার ডিউটি অফিসার সংবাদমাধ্যমকে জানান যে, পুলিশ এ ঘটনার পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রয়েছে কি না, তা তদন্ত করছে।

মুনতাহার লাশ পাওয়ার খবর শুনে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রতিবেশীরা জানান, মুনতাহা ছিল সবার প্রিয়। সে সদা হাসিখুশি ও মিশুক স্বভাবের ছিল। এই ঘটনার পর তার পরিবারের সদস্যরা শোকে ভেঙে পড়েছেন এবং তারা মুনতাহার জন্য সঠিক বিচার দাবি করছেন।

এখন দেখার বিষয়, পুলিশি তদন্তে কোন তথ্য উঠে আসে এবং এই করুণ ঘটনার পেছনের রহস্য উদঘাটিত হয় কি না। স্থানীয়রা এই মৃত্যুতে শোকাহত ও ক্ষুব্ধ, এবং তারা অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

ref:anj101124/02